শুধু আমই নয়, এবার আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবে আমের পাতাও। আম পাতায় উপস্থিত ভিটামিন এ, সি, কপার, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম নানাভাবে আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। শুধু তাই নয়, এতে উপস্থিত একাধিক উপকারি এনজাইম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবয়েল, শরীরের গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এখানেই শেষ নয়, বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে এই প্রকৃতিক উপাদানটি আরও নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন…
১. বারে বারে হেঁচকি ওঠার মতো সমস্যা কমে:
খেতে বসলেই কি হেঁচকি উঠতে থাকে? তাহলে নিয়মিত কয়েকটি আম পাতা পুড়িয়ে তার ধোঁয়া ইনহেল করুন। এমনটা করলে যে শুধু হেঁচকি ওঠার হেঁচকি কমবে, তেমন নয়, সেই সঙ্গে গলা সম্পর্কিত যে কোনও ধরনের রোগের প্রকোপ কমতেও দেখবেন সময় লাগবে না।
২. অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমায়:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত এক বালতি জলে পরিমাণ মতো আমের পাতা চুবিয়ে রেখে সেই জল দিয়ে যদি স্নান করা যায়, তাহলে অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। আসলে এমনটা করলে শরীর এবং মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে ভয় এবং অ্যাংজাইটির মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রমে চলে আসে।
৩. কিডনি স্টোনের চিকিৎসায় কাজে আসে:
আম পাতা শুকিয়ে নিয়ে সেগুলিকে গুঁড়ো করে নিন। তারপর সেই গুঁড়ো এক গ্লাস জলে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। তাহলেই প্রস্রাবের সঙ্গে স্টোন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।
৪. রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
রক্তনালীকে প্রসারিত করার পাশপাশি ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আম পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো প্রেসারের রোগীদের প্রতিদিন এক কাপ করে আম পাতার চা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
৫. ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে:
এদেশে যে হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আম পাতা খাওয়া প্রয়োজন যে বেড়েছে সে বিষযে কোনও সন্দেহ নেই! আসলে আম পাতার অন্দরে রয়েছে টেনিনস এবং অ্যান্থোসায়ানিন নামে দুটি উপাদান, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন আম পাতা দিয়ে তৈরি চা খেতে হবে, তাহলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে আম পাতা দিয়ে তৈরি চা খেলে নানাবিধ হার্টের রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
৬. বার্ন ইনজুরির চিকিৎসায় কাজে আসে:
রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়ে গেছে? চিন্তা নেই কয়েকটি আম পাতা নিয়ে সেগুলিকে পুড়িয়ে ফেলুন। তারপর সেই ছাই ক্ষত স্থানে ধীরে ধীরে ঘযে দিলেই দেখবেন পুড়ে যাওয়ার জ্বালা একেবারে কমে গেছে।
৭. দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:
মুখ থেকে বদ গন্ধ বেরচ্ছে? সেই সঙ্গে ক্যাভিটির সমস্যাও রয়েছে? তাহলে আর সময় নষ্ট না করে আম পাতাকে কাজে লাগান। এতে উপস্থিত নানাবিধ উপাদান এই ধরনের রোগকে কমিয়ে ফেলতে দারুন কাজে আসে।
৮. শ্বাসকষ্টের প্রকোপ কমায়:
প্রতিদিন আম পাতা দিয়ে তৈরি চা খেলে প্রায় সব ধরনের রেসপিরেটরি প্রবলেম দূর হয়। বিশেষ করে যারা ব্রঙ্কাইটিস এবং অ্যাস্থেমার সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে তো এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি দারুন কাজে আসে। তাই এবার থেকে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে পরিমাণ মতো জলে অল্প করে আম পাতা দিয়ে সেই জলটা ফুটিয়ে নিয়ে খাবেন। তাহলেই দেখবেন কষ্ট কমতে শুরু করে দিয়েছে।
৯. ইউরিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
কয়েকটি কচি আম পাতা নিয়ে জলে ফোটান। যতক্ষণ না পাতাগুলি একেবারে হলুদ হয়ে যাচ্ছে, ততক্ষণ জলটা ফোটাতে থাকুন। তারপর সেই জলটা পান করুন। এই ভাবে প্রতিদিন আম পাতার জল খেলে ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কিত কষ্ট একেবারে কমে যায়।
১১. স্ট্রেসের মাত্রা কমায়:
নিয়ম করে দিনের শেষে ২-৩ কাপ আম পাতা দিয়ে তৈরি চা পান করলে কোনও দিন মানসিক চাপ আপনাকে বিপদে ফেলতে পারবে না। আসলে আম পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা নার্ভকে শান্ত করে, ফলে মানসিক ক্লান্তি দূর হয়।
১২. গলা ব্যথা কমায়:
যে কোন ধরনের গলার সমস্যা কমাতে আম পাতার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে কয়েকটি আম পাতা পুড়িয়ে সেই ধোঁয়া নিতে থাকুন। তাহলেই দেখবেন গলার ব্যথা একেবারে কমে গেছে।